ইয়াছীন আলী সরদার:
ভূমি একজন মানুষের শ্রেষ্ঠ অবলম্বন। মানুষ তার সারাজীবনের সঞ্চয় দিয়ে একখন্ড ভূমি কিনে সেই ভূমির প্রশাসনিক রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব যদি যোগ্য হাতে না পড়ে তবেই বাড়ে জনভোগান্তি। হয়রানি থেকে বাঁচা অথবা দ্রুত কাজ করে দেয়ার কথা বলে প্রায়ই তৃতীয় পক্ষ হিসেবে বিভিন্ন দালালের কাছে নিজের জমির বিষয়াদি গছিয়ে দিই। ফলশ্রুতিতে নিজের জমির কোনো ত্রুটি থাকলে সেটা জানা সম্ভব হয়না এবং জমি বিষয়ে সবসময়ই অজানা থেকে যায়। অজ্ঞতার এ দুষ্টুচক্র থেকে বের হওয়া অত্যন্ত কঠিন। তাই নিজের জমির বিষয়ে যথাসম্ভব কোনো মাধ্যম ছাড়া নিজে কার্যক্রম সম্পাদনের চেষ্টা করতে সকল ভুমি মালিককে অনুরোধ জানিয়েছেন তালা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান।
১৭ মার্চ সোমবার বিকাল ৪টায় পাটকেলঘাটাস্থ তালা ভুমি অফিসে পাটকেলঘাটা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
তিনি জানান, দালালেরা সবসময় অপপ্রচার করে যে টাকা ছাড়া কাজ হয় না ফাইল আটকে থাকে। এই অপপ্রচার না করলে তাদের অবৈধ আয় বন্ধ হয়ে যাবে। যেকোনো অপপ্রচার সম্পর্কে সচেতন হতে এবং হয়রানি বন্ধে যেকোন অভিযোগ থাকলে সরাসরি তিনি এসিল্যান্ডকে জানাতে তার মোবাইলে (০১৯৮০৩৩২৫১৪) নাম্বারে যোগাযোগ করতেও অনুরোধ করেন তিনি।
সংশ্লিষ্টসুত্রে জানা যায়, ভূমি অফিসগুলোর দীর্ঘ দিনের জীর্ণতা আর দৈন্যতাকে পিছনে ঝেড়ে ফেলে নতুন উদ্যোমে ভূমি ব্যবস্থাপনা ও অফিস সিষ্টেম সংস্কারের ব্রত নিয়েই কাজ করে চলেছেন তালা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান। ইতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন এই কর্মকর্তার কাছে সেবা প্রত্যাশীরা অনেক বেশি খুশী।
আমাদের দেশে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে জনগণের অভাব-অভিযোগই কেবল শোনা যায় নিত্য। তবে তাদের মাঝে ব্যতিক্রমও পাওয়া যায়। যারা নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে জনগণের আস্থা ও প্রিয় মানুষ হয়ে ওঠেন। হয়রানি থেকে মুক্তি দেন মানুষকে। নিজের সরকারি দপ্তরকে করে তুলেছেন জনবান্ধব।
যেখানে ভূমি অফিস মানেই ভোগান্তি, টাকার ছড়াছড়ি। সাধারণ মানুষের হয়রানি আর অসহায়তার জায়গা। সেখানে একটি স্বচ্ছ, ঘুষবিহীন ও জবাবদিহিতামূলক সেবাকার্যক্রম পাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন জনাব মাসুদুর রহমান। তার নেতৃত্বে তালা উপজেলা ভূমি অফিসের সব নৈরাজ্য দূর হয়ে সেখানে তৈরি হয়েছে আস্থার পরিবেশ।
বর্তমান এসিল্যান্ড যোগদানের পর থেকে তার ইতিবাচক মনোভাবের কারণে উপজেলা ভূমি অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মধ্যে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ইতিবাচক মনোভাব দেখা গেছে। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিয়মিত তদারকি ব্যাবস্থা এবং সরাসরি অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত সমস্যা সমাধানকরন কার্যক্রম। তাছাড়া বিভিন্ন হাট বাজারে উপস্থিত হয়ে তাঁকে জনসচেতনামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম দেখা গেছে।
জানা যায়, এই এসিল্যান্ড মিসকেস নামজারি সংক্রান্ত মামলা শুনানির মাধ্যমে খুব কম সময়ে নিষ্পত্তি করেন। সরকারি খাস জমি, খাস পুকুর রক্ষায়,বাল্যবিবাহ বন্ধ করনে সবসময় তৎপর রয়েছেন। তিনি যোগদানের পর থেকে ভূমি অফিসকে দালালমুক্ত করে গতিশীল করেছেন।
এছাড়া এই কর্মকর্তা জমিসংক্রান্ত সব ধরনের সেবাগ্রহিতার অধিকার নিশ্চিত করে সবার কাছে ভূমি অফিসকে সহজ, স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ও গ্রহণযোগ্য করে গড়ে তুলেছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ভেজালবিরোধী অভিযান গতিশীল করেছেন।
জনগণের সেবা প্রাপ্তির বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করেন। অফিসের নথি ব্যবস্থাপনা, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধিসহ জনগণের সেবা প্রাপ্তির বিষয়টিকে বেশি সমৃদ্ধ করেছেন।
অফিস টাইম সকাল ৯টা হতে বিকাল ৪টা পর্যন্ত হলেও রাত ৮/ ৯ টা পর্যন্ত (রমজান মাস ব্যাতীত) আগত ভূমি মালিকদের সমস্যা আন্তরিকতার সাথে শুনে তাৎক্ষনিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করেন। পাশাপাশি সপ্তাহে ২দিন সোমবার ও বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে ও গণশুনানী নিয়ে তাৎক্ষনিক প্রতিকারের চেষ্টা করেন। ভিপি নবায়নের গতি বাড়ানো সম্পর্কে তিনি বলেন, গত জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত ১শত ফাইলের কাজ হয়েছে। এর মধ্যে ৭০ টি ফাইলের কাজ হয়েছে আমার যোগদানের দুই মাসে। ১৫০ ধারার বিষয়ে তিনি বলেন, দিনের পর দিন হাটতে হতো সেবা গ্রহিতাদের, এখন অল্প সময়ের মধ্যেই এগুলোর সামাধান পাচ্ছে। রমজানের পরে পেরিফেরি চান্দিনা ভিটে দ্রুত নবায়নের ক্ষেত্রে যাদের ৩ বছর পর্যন্ত বকেয়া আছে তাদেরকে তিনি স্পট নবায়নের ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন।
এমন অসংখ্য ভালো কাজ করে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন এ ভূমি কর্মকর্তা।
এরই মধ্যে উপজেলার এই সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাধারণ মানুষের পাশাপাশি উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রিয় হয়ে উঠেছেন।
তালা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জনাব মাসুদুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কঠোর নজরদারি ও দিক নির্দেশনায় ভূমি অফিসের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। সরকারি জমি রক্ষার ব্যাপারেও জেলা প্রশাসক মহোদয় আমাদেরকে দায়িত্বের সাথে ভূমিকা রাখার তাগিদ দিয়ে থাকেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে সেবাগ্রহিতাগণ তাদের ভূমির নামজারির শুনানী ও নিষ্পত্তির তারিখ ও সর্বশেষ অবস্থা জানতে ঘুরাঘুরি করতে হয় না। জানতে চাইলে তাৎক্ষনিক জানিয়ে দেয়া হয়। ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কাজগুলোও মনিটরিং করা হয়ে থাকে।
তাঁর এই প্রসংশনীয় কাজের ঈশ্বান্বিত হয়ে একটি কুচক্রীমহল যাদের অবৈধ ইনকামে বাধা গ্রস্থ হওয়ায় এ অফিসের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে চলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় এসিল্যান্ড অফিসের নাজির তপন কুমারের বিরুদ্ধে ঘুস দূর্নীতির অভিযোগ পত্রিকায় প্রকাশ করেন কথিত হলুদ সাংবাদিক। তার এ অভিযোগ সম্পর্কে নাজির তপন জানান, আমি কাজ সেরে ২ টাকা পর্যন্ত ফেরত দেই। তিনি বলেন,এই আলামিন নামের হলুদ সাংবাদিক আমার নিকট ৫০ হাজার টাকা দাবী করলে অস্বীকার করায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট সংবাদ পরিবেশন করে। এসব নামধারী হলুদ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি গ্রাহকদের ঠিকমতো সেবার কার্যক্রম নির্ভীঘ্নে করতে পারি সাংবাদিকদের কাছে তার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।